Thursday, September 29, 2016

‘দুই বাংলার কবি কবিতা‘

বজলুর রশীদ চৌধুরী
দুই বাংলার কবি কবিতা নহি মোরা পর,
একে অন্যের দোসর আছি সারা জনম ভর।
কর্ম দোষে বাস করি পরদেশী হয়ে,
লাঞ্চনা আর বঞ্চনা সদা যাচ্ছি সয়ে।
বঙ্গঁ ভান্ডার ভেঙ্গে গেল বিধি হল বাম,
আপন জন হল পর মুছে গেল দাম।
বর্ষে বর্ষে খুশীর সানাই বাজত সুরের তালে,
সেই সুর গেল দূর দুঃখ ভাসে ভালে।
এক নদীতে সাঁতার কাটি-একই তীরে বাস,
এক পানিতে স্নান করে পূরাই মনের আশ।
গাছ-গাছালীর শ্যামল ছায়ায় বন বানরের খেলা,
দেখে আরো প্রাণ জুড়ায় বর্ষাকালের ভেলা।
রোদ দুপুরে মাঠের পরে রাখাল বাজায় বাঁশী,
এই পথ ধরে যায় আমার দূরের গাঁয়ের চাষী।
সবুজ ঘেরা গাঁয়ের কোলে বসি গাছের ছায়,
হাওরী পথের বাঊরা বাতাস লাগে এসে গায়।
এত সুন্দর বাংলা আমার কেন হল দুই?
আবার কবে সেদিন হবে ঝুরে মরি মুই।
দুই বাংলার কবি কবিতা হও চির অমর,
তোমার বুকে ভাসে যেন সোনার বাংলার খবর।

কবি-মিশিগান, যুক্তরাস্ট্র।

কবি সৈয়দ শামছুল হককের স্মরণে

 বজলুর রশীদ চৌধুরী
কেমন করে বলি বিদায় ওগো বাংলার কল, 
মৃত্যুকোলে হাসছ তুমি সবার চোখে জল।
ছেড়ে গেলে মায়ার দুনিয়া দিয়ে গেলে সবি,
তোমায় লয়ে গাইব গান
তুমি বাংলার রবি।
সাহিত্যকে দিয়ে রস কাব্য করলে দান,
নাট্যকারকে দিলে নাটক চলচ্চিত্রে গান।
সর্বগুণের গুণী তুমি সবার চোখের মনি,
ভাবের আসর জাগিয়ে গেলে ওগো ভাবের খনি।

লেখক-মিশিগান, যুক্তরাজ্য।

Sunday, March 27, 2016

'শেষ নিবেদন'

বজলুর রশীদ চৌধূরী
চরন ধরি বিনয় করি ওগো দয়াময়,
তুমি বিনে এই ভুবনে আপন কেহ নয়।
সত্য পথে সদা চলতে শক্তি দাও মোরে,
পর মন্দ ঝগড়া দ্বন্দ্ব রাখ মোর দূরে।
আমি কাঙ্গাঁল তুমি দয়াল সর্ব শাস্ত্রে পাই,
তবে কেন নাহি শুন আমার ফরিয়াদ সাঈ।
জনমভর লোভের পর, পড়ে রইলাম ভবে,
নিজেকে নিজে পাইনি খুঁজে হারিয়ে গেলাম কবে?
আমি বান্দা আছি বান্ধা তব শিকল পরে,
মরন বীন বাজবে যেদিন, নিবে এসে ধরে।
তব দয়ায় আছি ধরায় সারা জনম ভর,
তুমি মহান বাচাঁও প্রাণ দিয়ে কত আদর।
আমি গরীব তুমি মনিব মহাবিশ্বে মাঝে,
কার সাধ্য করে বাধ্য তুমার সব কাজে?
রাখ মার সবই পার তুমি শক্তি ধর,
আমি পাপি চাহি মাফি ওগো দয়ার বর।
তুমি মালিক আমি আশিক আমার পানে চাও,
প্রান ভরি আরজ করি কবুল করে নাও।
তুমি শক্তি করি ভক্তি চির চিরন্তন,
তরাও মোরে পর পারে 'শেষ নিবেদন'।
লেখক-মিশিগান, যুক্তরাস্ট্র।

Sunday, March 6, 2016

স্বাধীন বাংলা


-বজলুর রশীদ চৌধূরী
ঊনসত্তুরে গণজাগরন, নাম তার ডাক্,
সমর শাসক পালিয়ে যায়, মুখে নাহি বাক্।
সত্তুরেতে গণভোট, পয়লা নির্বাচন,
বীর বাঙ্গালী জিতে নেয়, সারা বাংলার আসন।
শাসক গোষ্ঠী ভীত হয়ে কাঁপে থর থর,
চল চাতুরী কত চালায় বিজয়ের উপর।
একাত্তুরের সাত মার্চ ভাষন পরিস্কার,
বঙ্গবন্ধুর কন্ঠে ভাসে মুক্তির অধিকার।
‘‘এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’’
পঁচিশ মার্চ ভয়াল রাত, ইতিহাসের পাতায়,
লিখতে নাহি কলম চলে, চোখের জল খাতায়।
নির্বিচারে মানুষ মারে পাক হানাদার,
বিশ্ব-বিবেক হাকিয়ে বলে, সাবধান-খবরদার।
ছাব্বিশ মার্চ ‘স্বাধীন বাংলা’ মেজর জিয়া বলে,
বঙ্গবন্ধুর পূর্ব ঘোষণা, যুদ্ধে যাই চলে।
ডিসেম্বরে স্বাধীন হলাম, ত্রিশ লক্ষ মরে,
এত কষ্টের স্বাধীনতা, রাখবো যতন করে।
স্বাধীন দেশে থাকবো মোরা, স্বাধীন কথা বলে,
বুক ফুলিয়ে চলবো মোরা, নিশান বেঁধে গলে।

Tuesday, March 1, 2016

'স্বাধীনতার কথা'

বজলুর রশীদ চৌধূরী
জন্ম ভূমির কোলে বসি স্বাধীনতা কয়,
বড় কস্টে আসিয়াছি আমি-গমনের তরে নয়।
আকাঁ বাকাঁ বন্ধুর পথ বাহিয়া-মাঠ হইতে মাঠে,
রক্ত সাগরে ভাসিয়া আসিয়াছি জননীর ঘাটে।
বীর দর্পে আসিয়াছি আমি-ভীরু কভু নহি,
আঘাত গায়ে যতই লাগিয়াছে- নীরবে গিয়াছি সহি।
ভয় করি নাই-রাখিতে মায়ের বুকে মাথা,
স্ব-গৌরবে কহিতাছি আমি রক্ত ভাষা স্বাধীনতা।
মায়ের তরে জীবন আমার-মায়ের তরে মরণ,
কার স্বাধ্য আছে বল-আমাকে করিবে হরণ?
হাজার বছর ধরিয়া-সংগ্রাম সাধনার ফলে,
আসিয়াছি আমি আমার জননীর কোলে।
শোষন আর বঞ্চনাকে চিরতরে বিদায় দিয়া,
দেশ প্রেমে নিজেকে উৎসর্গ করিয়া।
আসিয়াছি আপন আলয়ে-হেরিতে মায়ের মুখ,
বাধাঁ যতই আসুক দূর করিব মায়ের দুখ।
রক্ত সাগরে দাঁড়াইয়া আজও কহিতাছি কথা,
পাজঁরে পাজঁরে লাগিয়া আছে কত যে ব্যাথা।
হারাইয়াছি ভাই-বোন, হারাইয়াছি মাতা-পিতা,
হারি নাই তবু-হইয়াছি জয়ী, আমি স্বাধীনতা।
নিষ্টুর আচরন করিব বারন-এই হস্ত দিয়া,
যে হস্তে আনিয়াছি মুক্তি-যাতনা দিয়াছি তাড়াইয়া।
আমি স্বাধীনতা সহিয়াছি ব্যথা-ক্ষত হৃদয়ে বলি,
মুক্তির ঘ্রান শুঁকিয়া শুঁকিয়া যেন জনমভর চলি।
দেশের তরে আছি আমি, দেশের তরে বাচি,
মাতৃভূমির তরে, আমার জীবন দিব যাচি।
মিশিগান, যুক্তরাস্ট্য