নায়ের মাঝি

// বজলুর রশীদ চৌধূরী //
নায়ের মাঝি ছাড়ছ তরী অচীন দেশের গাঁয়,
ফত ফতিয়ে রঙ্গীন বাদাম উড়ছে তোমার নায়।
কোন্ বা দেশে বাড়ী মাঝি-কোন্ বা গাঁয়ে ঘর,
তোমায় দেখে মন হয়-কত আপন মোর।
নায়ের মাঝি ছাড়ছ তরী অচীন দেশের গাঁয়,
ফত ফতিয়ে রঙ্গীন বাদাম উড়ছে তোমার নায়।
কোন্ বা দেশে বাড়ী মাঝি-কোন্ বা গাঁয়ে ঘর,
তোমায় দেখে মন হয়-কত আপন মোর।
পাল তুলিয়া যাও গো মাঝি-ধরে পূবাল বাও।
নায়ে থাক নায়ে ঘুমাও-নায়ে আহার বিহার,
জলের উপর ভাসিয়া বেড়াও-সঙ্গী নাই রে আর।
কত মানুষ পার হয়ে যায়-তোমার নৌকায় বসে,
কত জনা মুগ্ধ হয় ভাটিয়াল সুরের রসে।
কত দূরে যাওরে মাঝি-চোখের নাহি ঠাঁই,
দূরের গাঁয়ে লুকিয়ে গেলে বড়ই ব্যথা পাই।
সারা বছর চেয়ে থাকি বাইষ্যা মাসের আসে,
নৌকা নিয়ে আসছে বাজান-চোখের মাঝে ভাসে।
এই নায়েতে উঠে আমি শ্বশুর বাড়ী আসি,
দুই দিনের পথ ছিলাম আমি জলের উপর ভাসি।
পাল উড়াইয়া যাও গো মাঝি-হাওর নদী বাইয়া,
তোমায় দেখে দিন যায় আমার-বিরহের গান গাইয়া।
তোমার গানের ভাটির সুর আসে আমার কানে,
নিঠুরিয়া ভাইধন আমার আছে কোন্ পরানে।
কত কবি কত বাউল তোমার গান গায়,
কত করি কত বাউল তোমার গান গায়,
কত নারীর অশ্র“ ঝরে নাইওর যাওয়ার আশায়।
আপন মনে যাওরে মাঝি-বিরহের গান গেয়ে,
অভাগিনী বইস্যা রইলাম-বাজানে পথ চেয়ে।
বড় স্বাদ জাগে মাঝি-উঠি তোমার নায়,
তোমার লয়ে যাই গো আমি-আমা-র জনম গাঁয়।
--------------------------------
লেখক-মিশিগান, যুক্তরাষ্ট্র।

